কুমোরে পোকার বাসাবাড়ি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য | Kumore Pokar Bashabari Question Answer | Class 6 | Wbbse

প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা Class 6 এর কুমোরে-পোকার বাসাবাড়ি গল্পের প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। তোমাদের ষষ্ঠ শ্রেনীর পাঠ্যবইতে গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য এর লেখা কুমোরে-পোকার বাসাবাড়ি গল্প রয়েছে। গল্পের শেষে যে সব প্রশ্নপত্র গুলি রয়েছে তার সমাধান আমরা এখানে করে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে।

কুমোরে-পোকার বাসাবাড়ি

গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য


লেখক পরিচিতি

গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দের ১ আগস্ট বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাহিত্যচর্চা ও সমাজসেবা করেছেন, আবার পালাগানের দল তৈরি করেছেন। অপরদিকে ছবি আঁকা, ফটোগ্রাফি, কাঠের কাজ, ইলেকট্রিকের কাজ, মোটর মেকানিকস প্রভৃতি শিখেছেন। তিনি উদ্ভিদ ও কীটপতঙ্গ নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি তাঁর গবেষণার বিষয়ে অসংখ্য প্রবন্ধ লিখেছেন। বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান কম নয়। তিনি ‘জ্ঞান ও বিজ্ঞান’ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গোপাল ভট্টাচার্যের কয়েকটি বিখ্যাত বই—বাংলার কীটপতঙ্গ, বাংলার মাকড়সা, বাংলার গাছপালা। তিনি বহু পুরস্কার ও সম্মান পেয়েছেন। তিনি ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে আনন্দ পুরস্কার, ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে সত্যেন্দ্রনাথ বসু পুরস্কার, ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্র পুরস্কার, ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে দি বোস ইনস্টিটিউটের জুবিলি মেডেল পেয়েছেন। ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডি এস-এসসি উপাধি প্রদান করে। তাঁর স্মৃতিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে গোপালচন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দের ৮ এপ্রিল তিনি পরলোকগমন করেন।

১.১ গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য বাংলা ভাষায় কী ধরনের লেখালিখির জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন ?

উত্তর : গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য অনুসন্ধিৎসা এবং পর্যবেক্ষণমূলক রচনার ও বিজ্ঞান বিষয়ক রচনার জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন।

১.২ তাঁর লেখা একটি বইয়ের নাম লেখো।

উত্তর : ‘বাংলার মাকড়সা’ তাঁর লেখা একটি বই।

২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :

২.১ কুমোরে পোকার চেহারাটি কেমন ?

উত্তর : কুমোরে পোকার রং আগাগোড়া মিশমিশে কালো, রোগা লিকলিকে। মাঝখানের সরু অংশটির রং হলদে।

২.২ কুমোরে পোকা কী দিয়ে বাসা বানায়?

উত্তর : কুমোরে পোকা কাদামাটি দিয়ে বাসা বানায়।

২.৩ কোন্ অদৃশ্য স্থানে কুমোরে পোকা বাসা বাঁধছে—তা কীভাবে বোঝা যায় ?

উত্তর : কুমোরে পোকা বাসা তৈরির জন্য মাটির ডেলাকে চেপে লম্বা করে চেপে বসাবার সময় তীক্ষ্ণ স্বরে একটানা গুন গুন শব্দ করে। কোন্ অদৃশ্যস্থানে কুমোরে পোকা বাসা বাঁধছে সেটা তার তীক্ষ্ণ স্বরে একটানা গুন গুন শব্দ শুনে বোঝা যায় ।

3.8 মাকড়সা দেখলেই কুমোরে-পোকা কী করে?

উত্তর : কোনোক্রমে একবার মাকড়সা দেখতে পেলে, ছুটে গিয়ে তার ঘাড় কামড়ে ধরে। কিন্তু কামড়ে ধরলেও একবারে মেরে ফেলে না। শরীরে হুল ফুটিয়ে এক রকম বিষ ঢেলে দেয়। কোনো কোনো মাকড়সাকে পাঁচ-সাতবার পর্যন্ত হুল ফুটিয়ে দেয়। এতে মাকড়সার মৃত্যু না হলেও অসাড় হয়ে পড়ে থাকে। সেই মাকড়সাকে কুঠুরির মধ্যে ঢুকিয়ে দেয় ।

৩. নীচের বিশেষ্য শব্দগুলিকে বিশেষণ এবং বিশেষণ শব্দগুলিকে বিশেষ্য করো :

উত্তর :

বিশেষ্য বিশেষণ
স্থান
নির্মাণ
সঞ্চয়
স্থানীয়
নির্মিত
সঞ্জিত
বিশেষ্য বিশেষণ
লম্বা
নির্বাচন
লম্বাটে
নির্বাচিত

৪. নীচের বাক্যগুলি থেকে অনুসর্গ খুঁজে বের করো :

৪.১ বাসা তৈরির জন্য উপযুক্ত স্থান খুঁজতে বের হয়।

উত্তর : অনুসর্গ—জন্য।

৪.২ সেই স্থান থেকে নির্বাচিত স্থানে যাতায়াত করে রাস্তা চিনে নেয়।

উত্তর :: অনুসর্গ—থেকে।

৪.৩ সেই স্থানে কাদামাটি চাপা দিয়ে দেখছি।

উত্তর : অনুসর্গ—দিয়ে।

৫. উপযুক্ত প্রতিশব্দ পাঠ থেকে খুঁজে লেখো :
নির্মাণ, উপোযোগী, ভর্তি, সন্ধান, ক্ষান্ত।

উত্তর : নির্মাণ → তৈরি। উপযোগী → উপযুক্ত। ভর্তি → পূর্ণ। সন্ধান → খোঁজ, অনুসন্ধান। ক্ষান্ত → নিরস্ত।

৬. তুমি প্রতিদিন পিঁপড়ে, মৌমাছি, মাকড়সা প্রভৃতি কীটপতঙ্গ তোমার চারপাশে দেখতে পাও। তাদের মধ্যে একটি পর্যবেক্ষণ করো, আর তার চেহারা, স্বভাব, বাসা বানানোর কৌশল ইত্যাদি খাতায় লেখো।

উত্তর :

কীট/পতঙ্গের নামশুয়োপোকা
কোথায় দেখেছবাড়ির চারপাশে ।
চেহারা/গায়ের রংবড়ো সাদা বা কালো শোঁয়া দিয়ে ঢাকা।
কীভাবে চলেসরসর করে দ্রুত চলে।
কী খায়কচি গাছের পাতা।
বিশেষ বৈশিষ্ট্যরূপান্তরের পর বিভিন্ন বর্ণের হয়, কালো, হলুদ, সাদা প্রভৃতি।
বাসাটি দেখতে কেমনগুটির মতো।
কীভাবে বানায়মুখের লালা দিয়ে চারপাশ ঘিরে ফেলে, বাতাস লেগে তা ঠান্ডা হয়ে গুটিতে পরিণত হয়।

৭. গঠনগতভাবে কোটি কী ধরনের বাক্য লেখো :

৭.১ ইতিমধ্যে মাটি শুকিয়ে বাসা শক্ত হয়ে গেছে।

উত্তর : সরল বাক্য ।

৭.২ একবার হুল ফুটিয়ে নিরস্ত্র হয় না।

উত্তর : সরল বাক্য ।

৭.৩ কাজেই এ থেকে মনে হয় যে কুমোরে পোকা ইচ্ছামতো ডিম পাড়বার সময় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

উত্তর : জটিল বাক্য ।

৭.৪ ভিজা মাটির উপর বসে এবং লেজ নাচাতে নাচাতে এদিক ওদিকে ঘুরে ফিরে দেখে।

উত্তর : যৌগিক বাক্য।

৮. নীচের প্রশ্নগুলি নিজের ভাষায় উত্তর লেখো :

৮.১ কুমোরে পোকার বাসাবাড়িটি দেখতে কেমন ?

উত্তর : কুমোরে পোকার বাসাবাড়িটি মাটির গাঁথনি দেওয়া কুঠুরির মতো। নম্বাটে বাসাটি সোয়া এক ইঞ্চির মতো গভীর হয় ।

৮.২ কুমোরে পোকা বাসা বানানোর প্রস্তুতি কীভাবে নেয় ?

উত্তর : ডিম পাড়বার সময় হলেই কুমোরে পোকা বাসা তৈরি করার জন্য উপযুক্ত স্থান খুঁজতে বের হয়। দু-চার দিন ঘুরে-ফিরে মনোমতো স্থান নির্বাচন করে। তারপর আশে পাশে বার বার ঘুরে বিশেষ ভাবে পরীক্ষা করে দেখে। তারপর খানিক দূর উড়ে গিয়ে আবার ফিরে আসে এবং স্থানটাকে বার বার দেখে নেয়। অবশেষে কাদামাটির সন্ধানে বের হয়। কাদামাটির সন্ধান পেলে সেখান থেকে বাসা তৈরির স্থান পর্যন্ত পথটি ভালো করে চিনে নেয়।

৮.৩ কুমোরে-পোকার বাসা বানানোর প্রক্রিয়াটি নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর : কুমোরে পোকার ডিম পাড়ার সময় হলে বাসা তৈরির জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করে। তারপর দুরে উড়ে গিয়ে কাদামাটির সন্ধান করে। যেখানে ভিজে মাটি আছে, সেখান থেকে মুখে করে মটর দানার মতো মাটির ডেলা নিয়ে আসে। তারপর মাটির ডেলাগুলোকে একটার উপর একটা বসিয়ে গেঁথে তোলে দেওয়াল। ভিতরটা সোয়া এক ইঞ্চির মতো ফাঁকা থাকে। একটি কুঠুরি নির্মাণ করতে সময় লেগে যায় দুদিন। ইতিমধ্যে বাসা শুকিয়ে শক্ত হয়ে যায়। তারপর শরীর থেকে একরকম রস বের করে দেওয়ালের চারিদিকে মাখিয়ে দেয়। তারপর শিকার করে এনে ভিতরে পুরে দেয়। সেখানেই ডিম পেড়ে কুঠুরির মুখ বন্ধ করে দেয়।

৮.৪ ‘এইসব অসুবিধার জন্য অবশ্য বাসা নির্মাণে যথেষ্ট বিলম্ব ঘটে।’— কোন্ অসুবিধাগুলির কথা এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে?

উত্তর : কুমোরে পোকা যে স্থানটি বাসা নির্মাণের জন্য বেছে নেয়, সেখানের বাসা নষ্ট হলে, আবার কাদামাটি নিয়ে এসে নতুন করে কুঠুরি নির্মাণ শুরু করে। এরফলে সময় অনেক নষ্ট হয়ে যায়।

৮.৫ কুমোরে-পোকার শিকার ধরার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করো। শিকারকে সে কীভাবে সংগ্রহ করে ?

উত্তর : কুমোরে পোকা তার বাসার এক-একটা কুঠুরি তৈরি করার পর সে শিকার ধরে এনে কুঠুরিতে রাখে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হলে সেই বাচ্চা এই শিকারকে খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করবে। এটাই তার শিকার ধরার উদ্দেশ্য।

কুমোরে পোকা প্রথমে শিকারের পিছনে ছোটে। বিশেষ একধরনের মাকড়সা দেখতে পেলে তার ঘাড় কামড়ে ধরে। শিকারকে যে একবারে মেরে ফেলে তা নয়, হুল ফুটিয়ে দেয়। কোনো কোনো মাকড়সাকে ৫ থেকে ৭বার পর্যন্ত হুল ফুটিয়ে থাকে। মাকড়সা অসাড় হয়ে পড়লে তাকে কুঠুরির মধ্যে নিয়ে আসে এবং চিত করে রেখে তার উদরদেশের একপাশে লম্বাটে ধরনের ডিম পাড়ে।

৮.৬ “বাসার আর কোনো খোঁজ খবর নেয় না”—কখন কুমোরে পোকা তার বাসার আর কোনো খোঁজ খবর নেয় না ?

উত্তর : কমোরে পোকা শিকার ধরে কুঠুরির মধ্যে রেখে সেখানে ডিম পেড়ে কুঠুরির মুখ বন্ধ করে। তারপর অন্য কুঠুরি নির্মাণ করতে শুরু করে। একটি বাসায় চার-পাঁচটি কুঠুরি নির্মাণ করে ডিম পাড়া সম্পূর্ণ হলে সে তার ইচ্ছা মতো যে-কোনো স্থানে চলে যায়। বাচ্চাদের জন্য খাদ্য সঞ্চিত রেখেই খালাস।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর

১. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

১.১ কুমোরে পোকার শরীরের কোন অংশের রং হলুদ?

উত্তর : কুমোরে পোকার শরীরের মাঝের সরু অংশটির রং হলুদ।

১.২ কুমোরে পোকা কখন বাসা তৈরি করে ?

উত্তর : ডিম পাড়ার সময় হলে কুমোরে পোকা বাসা তৈরি করে।

১.৩ কুমোরে পোকা একটি কুঠুরিতে কাটি ডিম পাড়ে ?

উত্তর : কুমোরে পোকা প্রতিটি কুঠুরিতে একটি করে ডিম পাড়ে।

১.৪ কুমোরে পোকা ইচ্ছামতো ডিম পাড়বার সময় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে—লেখকের এমন মনে হওয়ার কারণ কী?

উত্তর : কুমোরে পোকা একটি কুঠুরি নির্মাণ করে তাতে মাকড়সা রেখে তারপর ডিম পাড়ে। তারপরে আবার এেকটা কুঠুরি নির্মাণ করে তাতে ডিম পাড়ে। এইভাবে চার-পাঁচটি কুঠুরি নির্মাণ করে। এই যে একের পর এক কুঠুরি নির্মাণ, তাতে মাকড়সা শিকার করে রাখা—এসবের নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। কুঠুরি তৈরি হলেই সে একটি করে ডিম পাড়ে। তাই ডিম পাড়ার সময় নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে।

১.৫ কুমোরে পোকা কী ধরনের মাকড়সা শিকার করে ?

উত্তর : একরকমের ছোটো মাকড়সা যারা জাল বোনে না, ঘুরে ঘুরে শিকার ধরে—কুমোরে পোকা এজাতীয় মাকড়সা শিকার করে।

১.৬ কুমোরে-পোকা এক-একটা কুঠুরিতে কতগুলি মাকড়সা জমা করে?

উত্তর : কুমোরে-পোকা এক-একটা কুঠুরিতে দশ-পনেরোটি মাকড়সা জমা করে।

১.৭ কুমোরে-পোকা কুঠুরির ভিতরের দেওয়ালে কীসের প্রলেপ দেয়?

উত্তর : কুমোরে-পোকা কুঠুরির ভিতরের দেওয়ালে তাদের মুখ থেকে নিঃসৃত একপ্রকার লালার প্রলেপ দেয়।

২. নির্দেশমতো বাক্য পরিবর্তন করো :

২.১ ডিম পাড়া সম্পূর্ণ হয়ে গেলে সে তার ইচ্ছামতো যেকোনো স্থানে চলে যায়। (জটিল বাক্যে)

উত্তর : যখন ডিম পাড়া সম্পূর্ণ হয় তখন সে তার ইচ্ছামতো যেকোনো স্থানে চলে যায়।

আরো পড়ুন

ভরদুপুরে কবিতা | নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী | প্রশ্ন ও উত্তর | ষষ্ঠ শ্রেণীর বাংলা

শঙ্কর সেনাপতি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়

খোলামেলা দিনগুলি গল্পের প্রশ্ন উত্তর | শান্তিসুধা ঘোষ

পাইন দাঁড়িয়ে আকাশে নয়ন তুলি কবিতার প্রশ্ন উত্তর | হাইনরিখ হাইনে

ঘাসফড়িং কবিতার প্রশ্ন উত্তর | অরুণ মিত্র

চিঠি কবিতার প্রশ্ন উত্তর | জসীমউদ্দিন

হাট কবিতার প্রশ্ন উত্তর | যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত

Post a Comment